আজ ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ


চোখ জুড়ানো জারুল

(আজকের দিনকাল):এই ছবিটি চেনা/মনের মধ্যে যখন খুশি/এই ছবিটি আঁকি/এক পাশে তার জারুল গাছে/দুটি হলুদ পাখি’-কবি আহসান হাবীবের বিখ্যাত ‘স্বদেশ’ কবিতায় গ্রামবাংলা থেকে প্রায় হারিয়ে যাওয়া জারুল গাছের কথা উল্লেখ আছে। আবার কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায়েও জারুল গাছের উপস্থিতি রয়েছে।

তিনি লিখেছেন, ‘এই পৃথিবীর এক স্থান আছে-সবচেয়ে সুন্দর করুণ/ সেখানে সবুজ ডাঙ্গা ভরে আছে মধুকুপী ঘাসে অবিরল/সেখানে গাছের নাম; কাঁঠাল, অশ্বত্থ, বট, জারুল, হিজল। জীবনানন্দ দাশের এসব বৃক্ষের নামের ভেতর একটি অতি চমৎকার ফুলের নাম আছে। তার রূপ এতই মোহনীয় যে চোখ জুড়িয়ে যায়। এ বৃক্ষের নাম জারুল আর এর ফুল জারুল ফুল নামে পরিচিত। আমরা যখন বসন্তকালের ফুলের রূপে মুগ্ধ হই তখন জারুল তার সব শোভা নিয়ে গ্রীষ্মে ফোটে। এখন খুব বেশি দেখা না গেলেও জারুল আমাদের গ্রামবাংলার এক সময়ের অতি চেনা একটি গাছের নাম।

জারুল ফুলের মূল বৈশিষ্ট্য হলো-বেশিরভাগ ফুল যখন বসন্তে পাপড়ি মেলে দেয়, সৌন্দর্য ছড়ায় তখন জারুলের সময় হলো গ্রীষ্মকাল। খটখটে রৌদ্রে জারুল ফুল পাপড়ি মেলে। শরৎ পর্যন্ত এ ফুল থাকে। জারুল গাছ নিম্নাঞ্চলে যেমন জন্ম নেয়, বেড়ে ওঠে সেভাবেই। শুকনো এলাকায়ও বেড়ে ওঠে। বসন্ত এলে জারুল গাছ নতুন প্রাণ পায়। নতুন পাতা, শাখা-প্রশাখায় ভরে ওঠে। বেগুনি রঙের থোকা থোকা ফুল ফোটে গাছের শাখার ডগার দিকে। একসঙ্গে অনেক ফুল থাকে।

প্রতিটি ফুলে ৬টি পাপড়ি থাকে। জারুল লেজারস্ট্রমিয়া গণের উদ্ভিদ। ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব উদ্ভিদ এটা। জারুলের পাতাগুলো বেশ লম্বা ধরনের। এর বৈজ্ঞানিক নাম লেজারস্ট্রমিয়া স্পেসিওজা। জারুল গাছের ভেষজ উপকারিতাও রয়েছে। জ্বর, অনিদ্রা, কাশি ও অজীর্ণতায় জারুল উপকারী। জারুলের কাঠও শক্ত ও মূল্যবান। বড় জারুল গাছ থেকে আসবাবপত্রও তৈরি করা হয়।

Share

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ