আজ ৭ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন: মিয়ানমার ও বাংলাদেশের পরিকল্পনায় অসন্তুষ্ট হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

(আজকের দিনকাল):বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনার তীব্র সমালোচনা করলো হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সংস্থাটি জানিয়েছে এই পদক্ষেপের ফলে রোহিঙ্গাদের জীবন ও স্বাধীনতা গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। বাংলাদেশে প্রায় এক মিলিয়ন রোহিঙ্গার আবাসস্থল, যাদের অধিকাংশই মিয়ানমারে ২০১৭ সালের সামরিক দমন অভিযান থেকে পালিয়েছিল। বিষয়টি এখন জাতিসংঘের তদন্তের বিষয়। দুই দেশ আগামী সপ্তাহে একটি পাইলট প্রকল্পে প্রায় ১১০০ জনকে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও জাতিসংঘ বারবার বলেছে পরিস্থিতি এখনো অনুকূল নয়।হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশের উদ্দেশে বলেছে -”কেন রোহিঙ্গারা শরণার্থী হয়ে উঠল তা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের ভুলে যাওয়া উচিত নয় এবং মনে রাখা উচিত পরিস্থিতির এখনো পরিবর্তন হয়নি। বাংলাদেশের কাঁধে শরণার্থীদের বিশাল বোঝা রয়েছে। কিন্তু প্রতিকার হিসেবে শরণার্থীদের মিয়ানমারে জান্তার নির্মম শাসনব্যবস্থায় ফেরত পাঠানো আরো ধ্বংস ডেকে আনবে।” মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রায় ৬ লক্ষ রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবির এবং গ্রামে জীবন কাটাচ্ছে। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় মোখার মতো চরম দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া তাঁদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের সংখ্যা অনুযায়ী, রবিবার মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে ঝড়টি বয়ে যাবার পর কমপক্ষে ৮১ জন নিহত হয়।

এই মাসে ২০ জন রোহিঙ্গা রাখাইনে দুটি পুনর্বাসন শিবির পরিদর্শন করেছে যেখানে মিয়ানমারের জান্তা তাদের থাকার পরিকল্পনা করছে। সফরের অংশ ছিল এমন বেশ কয়েকজনের সাথে এএফপি কথা বলেছে এবং তারা  ঘূর্ণিঝড়ের পর রাখাইনের পুনর্বাসন শিবির নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে, কারণ অনেক শিবির ঝড়ের দাপটে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। ৩৮ বছর বয়সী হাফিজ সোলায়মান জানাচ্ছেন -” আমরা মিয়ানমারের এই পদক্ষেপ মেনে নিতে প্রস্তুত নই। তারা আমাদের জন্য যে ব্যবস্থা করেছে তা আমাদের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট নয়। এর আগেও আমাদের ওপর যে নিপীড়ন চালানো হয়েছে তার জন্য আমরা কোনো বিচার পাইনি। আমরা মিয়ানমার সরকারকে এক শতাংশও বিশ্বাস করি না।” দ্বিতীয় আরেকজন যিনি নিজেকে উল্লাহ বলে পরিচয় দিয়েছেন তিনি বলছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী মোখা থেকে তার আত্মীয়দের বাঁচানোর কোনো চেষ্টা করেনি। ফলে তাদের সবকিছুই ঘূর্ণিঝড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। যদিও
বাংলাদেশের শরণার্থী কমিশনার মিজানুর রহমান রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাধ্য করা বা তাদের সঙ্গে পরামর্শ না করার কোনো দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। রহমান এএফপিকে বলেছেন, “প্রত্যাবাসনে যাঁরা রাজি তাদেরই স্বেচ্ছায় পাঠানো হবে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দাবি অসত্য।”

সূত্র : alarabiya.net

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ