(আজকের দিনকাল):অনেক দিন ধরেই তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে টানাপোড়েন চলছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের। সেই অসস্তি আরও বেড়েছে গত ১৪ মে তুরস্কে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে। ওই সময় এরদোগানকে ‘স্বৈরশাসক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন বাইডেন।
এ অবস্থায় আগামী ২৮ মে দ্বিতীয় রাউন্ডের নির্বাচনে এরদোগান পুনরায় প্রেসিডেন্ট হলে বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে কেমন সম্পর্ক হবে- তা জিজ্ঞেস করা হয়েছিল তুর্কি নেতাকে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই প্রশ্নের কৌশলী জবাব দিয়েছেন ২০ বছর ধরে তুরস্ক শাসন করা এরদোগান।
৬৯ বছর বয়সি এই রাজনীতিক বলেন, পুনঃনির্বাচিত হলে তিনি বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করবেন এতে কোনো সন্দেহ নেই। এমনকি বাইডেন প্রশাসন পরিবর্তন হলে দেশটির নতুনদের সঙ্গেও কাজ করবেন তিনি।
ইউক্রেন সংঘাতে রাশিয়ার প্রতি পশ্চিমের অবস্থান সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, পশ্চিমারা এই বিষয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করেনি। এর আগে পশ্চিমের উস্কানিমূলক নীতি অনুসরণ করার বিষয়ে তার পূর্ববর্তী মন্তব্যের প্রসঙ্গে এ প্রশ্ন করা হয়।
তুর্কি নেতা যুক্তি দেখিয়ে বলেন, রাশিয়ার মতো একটি দেশের প্রতি ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি আরও যুক্তিযুক্ত। তিনি বিশ্বে পারস্পরিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার ইতিবাচক সম্পর্কের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। পশ্চিমাদেরও অনুরূপ পন্থা অবলম্বনের পরামর্শ দেন তিনি।
তুরস্কের সরকারি বার্তা সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ‘স্বৈরশাসক’ মন্তব্যটি স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় এরদোগানকে।
এর জবাবে তুর্কি নেতা পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, একজন ব্যক্তি, যিনি (নির্বাচনে) প্রথম নয়, দ্বিতীয় রাউন্ডে পৌঁছেছেন, তাকে কীভাবে স্বৈরশাসক হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে?
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন, যে পিপলস অ্যালায়েন্স (ক্ষমতাসীন জোট) ৩২২ জন ডেপুটি (সংসদ সদস্য) নিয়ে পার্লামেন্টে প্রবেশ করবে এবং জোটের নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তি (এরদোগান) দ্বিতীয় রাউন্ডের বিজয়ী হিসেবে আবির্ভূত হবেন, আমাকে বলবেন- ‘এটা কী ধরনের একনায়কত্ব?’
গত ১৪ মে তুরস্কে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কেউ সরাসরি প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোট পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারেননি। ফলে আগামী ২৮ মে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয় দফা ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
অবশ্য প্রথম দফার ভোটে প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি নেতা এবং ছয় দলীয় জোট ন্যাশন অ্যালায়েন্সের প্রার্থী কামাল কিলিকদারোগ্লুর চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন এরদোগান।
অপরদিকে পার্লামেন্টে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে এরদোগানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপি) নেতৃত্বাধীন জোট পিপলস অ্যালায়েন্স।
Leave a Reply