(আজকের দিনকাল):আবারো একতরফা নির্বাচন করার লক্ষ্যে দেশজুড়ে মিথ্যা ও গায়েবি মামলার হিড়িক পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হচ্ছে গণতন্ত্রকামী হাজার হাজার মানুষ। বিএনপির কেন্দ্রঘোষিত চলমান কর্মসূচি বানচাল করতে সরকার মামলা, মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার এবং নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অসংখ্য মানুষকে হত্যা, অন্ধ ও পঙ্গু করে যাচ্ছে।
সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির এ সিনিয়র নেতা বলেন, দেশকে পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীল করার জন্য আওয়ামী অবৈধ সরকার নানা ধরনের চক্রান্তে মেতে উঠেছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ভয়াবহ বেকারত্ব, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা চরম হ্রাস পাওয়াসহ সারা দেশ ডুবে আছে অনাচার ও নৈরাজ্যের অমানিশায়। জনগণের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাসহ সব অধিকার কেড়ে নিয়ে শেখ হাসিনা যে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্বের অধিকারী হয়েছেন, সেটি ধরে রাখতেই হিমশিম খাচ্ছেন। সে জন্যই বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছে নিপীড়ন-নির্যাতনের নিষ্ঠুর বিভীষিকা।
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার গত ১৪ বছর জাতির ওপর যে ঘোর দুর্দশার বিস্তার ঘটিয়েছে, সেটির একমাত্র উদ্দেশ্য যেনতেন প্রকারে অবৈধ সিংহাসনকে আঁকড়ে রাখা। আওয়ামী সরকার ব্যাংক লুটেরা ও টাকা পাচারকারী গোষ্ঠীর আদর্শ হয়ে উঠেছে। তাই সুখের স্বর্গ ধরে রাখতে বিরোধী দলশূন্য বাংলাদেশ গড়তে তাদের দিনরাত গলদঘর্ম হচ্ছে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সবার সামনে থেকে মজনুকে তুলে নিয়ে গেছে। তাকে ডিবি কার্যালয়েই রাখা হয়েছে, কিন্তু তারা এখনো স্বীকার করছে না (এ বক্তব্য দেওয়া পর্যন্ত স্বীকার করা হয়নি, তবে পরে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে)। এ ঘটনায় মজনুর পরিবার ও বিএনপি নেতাকর্মীরা শঙ্কিত। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নম্বর-৪৫২৩/২০২১-এর আদেশ এখনো বলবৎ রয়েছে। আদেশে কোনো উপযুক্ত আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া রফিকুল আলম মজনুকে গ্রেফতার বা হয়রানি না করতে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এই নির্দেশনাও রয়েছে যেন সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া পেন্ডিং মামলায়ও তাকে গ্রেফতার দেখানো না হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ আদালতের এই আদেশের প্রতি সম্মান জানিয়ে অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহপ্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।
মজনুর মুক্তির দাবিতে নয়াপল্টনে বিএনপির বিক্ষোভ
এদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিএনপি। সোমবার দুপুরে একটি বিক্ষোভ মিছিল নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে কাকরাইলের নাইটিংগেল মোড় ঘুরে ফের নয়াপল্টনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
মিছিলে নেতৃত্ব দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। এ সময় মিছিলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, সহসভাপতি ইউনুস মৃধা, যুগ্ম সম্পাদক আকবর হোসেন নান্টু, যুবদলের ওমর ফারুক মুন্না, লিয়ন হক, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি ওমর ফারুক কাউসার, বর্তমান সহসভাপতি নাসির উদ্দিন নাসিরসহ কয়েকশ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply