আজ ১১ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গর্ভাবস্থায় মৃত্যুর ২৪ শতাংশ ঘটে উচ্চ রক্তচাপে

(আজকের দিনকাল):দেশের মোট মাতৃমৃত্যুর ২৪ শতাংশই গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগে হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন গাইনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। শনিবার রাতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চ্যাপ্টার অব অরগানাইজেশন জেস্টোসিস ও অবস্টেট্রিকাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের (ওজিএসবি) প্রথম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে বক্তারা এ কথা জানান।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশে ক্রমেই মারাত্মক পর্যায়ে যাচ্ছে উচ্চ রক্তচাপের রোগী। বিশেষ করে গর্ভবতী নারীদের এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। দেশে যত মাতৃমৃত্যু হয়, তার ২৪ শতাংশই গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপজনিত রোগে হয়। এজন্য গর্ভবতীদের উচ্চ রক্তচাপ ঠেকাতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

তারা আরো বলেন, গর্ভবতী মায়েদের জন্য জেস্টোসিস খুবই ভয়াবহ একটি রোগ। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য আমাদের সম্মিলিতভাবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজ করতে হবে, যা প্রসূতি ও গাইনোকোলজির অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবে। যার ফলে মা, নারী এবং নবজাতকের স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। জেস্টোসিসজনিত মৃত্যু কীভাবে শূন্যের কাছাকাছি নামিয়ে আনা যায় সে সম্পর্কেও তারা সচেতনতায় জোর দেন।

এ সময় বাংলাদেশ চ্যাপ্টার অব অরগানাইজেশন জেস্টোসিসের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফেরদৌসী বেগম বলেন, গর্ভাবস্থায় জটিলতাগুলোর বিষয়ে সবারই জানা জরুরি। এ সময় উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বেড়ে যায়, অনেকে অত্যধিক বমি করে, এমনকি শকে চলে যায়, মৃত্যু পর্যন্ত হয়। এজন্য গর্ভবতীদের উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, প্রতি ১০ জন গর্ভবতী নারীর এক জন এ সমস্যায় ভোগেন। তিনি আরো বলেন, আমাদের মাতৃমৃত্যুর ২৪ ভাগই হয় একলামশিয়ায়। এই বিষয়টিকে সামনে আনাই এই সংগঠনের উদ্দেশ্য। কম বয়সে, বেশি বয়সে এবং ঘনঘন বাচ্চা নিলে সমস্যাগুলো বেশি হয়। এজন্য আমাদের কিশোরী বিবাহ রোধ, মুটিয়ে যাওয়া প্রতিরোধ এবং পুষ্টির মান ভালো রাখতে হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ।

এ সময় ওজিএসবির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. গুলশান আরা বলেন, ‘জেস্টোসিস রোগের মূল উপাদান হলো প্রি-একলামশিয়া ও একলামশিয়া (গর্ভধারণের ২০ সপ্তাহ পর রক্তের চাপ স্বাভাবিক থেকে বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ওজন বেড়ে যাওয়া এবং পায়ে পানি জমে যাওয়া)। এই রোগটি যদি সময় মতো নির্ণয় এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা না যায়, তাহলে মা এবং নবজাতকের মৃত্যু হয়ে থাকে।

গর্ভবতী মায়েদের করণীয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জেস্টোসিস থেকে বাঁচতে মায়েদের এন্টিনেটাল চেকআপ করতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এন্টিনেটাল চেকআপের হার খুবই কম। ৪৭ ভাগ মায়েরা চারটি এন্টিনেটাল চেকআপ নেয়, বাকিরা নিতে যে হবে, সেটিও জানে না। এজন্য আমরা বলি যে, গর্ভাবস্থায় মায়েদের এন্টিনেটাল চেকআপ খুবই জরুরি। একই সঙ্গে হসপিটাল ডেলিভারি বাড়াতে হবে, ডেলিভারির পরে যে কেয়ার নেওয়া হয়, সেটিও বাড়াতে হবে।

সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. ফেরদৌসী বেগমের সভাপতিত্বে এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া, স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, ওজিএসবির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. টি এ চৌধুরী।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ