আজ ১৯শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৪ঠা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নেতাদের সাজা দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না: মির্জা ফখরুল

(আজকের দিনকাল):বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও আমানউল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দেওয়া রায়কে ‘ফরমায়েশি’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকার সম্পূর্ণ রাষ্ট্রযন্ত্রকে দখল করে নিয়েছে, বিচারব্যবস্থাকে দখল করে নিয়েছে।

ফরমায়েশি রায় দিয়ে নেতাকর্মীদের কারাগারে পাঠিয়ে তারা আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দিতে চায়। সেটা সম্ভব নয়। এই রায় দিয়ে কোনোদিন চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। এবার জনগণ সেটা করতে দেবে না।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তার মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামীতে আবারও সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন যাতে না হতে পারে সেজন্য সরকার বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সাজা দিচ্ছে। তারা একতরফা, কারচুপির নির্বাচনের পথে হাঁটছে। বাংলাদেশ সম্পূর্ণভাবে একদলীয় শাসন ব্যবস্থার জাঁতাকলে পড়েছে, ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করা হচ্ছে।

‘এই সরকারের শুভবুদ্ধি উদয় হওয়ার আর কোনোরকমের সম্ভাবনা নেই’ বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, জনগণের উত্তাল আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটানো হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করা হবে।

সকাল ১১টার দিকে বিএনপি মহাসচিব দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালামসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের মাজারে যান। প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনায় মোনাজাতেও তারা অংশ নেন।

আজকে দিনে জিয়াউর রহমানের প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘যে কোনো মূল্যে হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করব, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনব। সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক সমাজ, রাষ্ট্র নির্মাণ করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে, এই হচ্ছে আজকে আমাদের শপথ।’

এর আগে সকাল ১০টা থেকে জিয়াউর রহমানের মাজারে কয়েক হাজার নেতাকর্মী শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সমবেত হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, মহিলা দল, কৃষক দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, তাঁতী দল, মৎস্যজীবী দল, ড্যাব, অ্যাব, জাসাস, জিসাস, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ, জিয়া পরিষদ, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, জিয়ামঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, শ্যামা ওবায়েদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নাসির উদ্দিন অসীম, শাম্মী আখতার, নিলোফার চৌধুরী মনি, আমিনুল হক, কাজী আবুল বাশার, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, যুবদলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, মামুন হাসান,

স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, রাজিব আহসান, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।

শেরেবাংলা নগরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বিএনপি মহাসচিব গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের সামনে দুস্থ ও গরিবদের মধ্যে খাবার ও বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ সময় আমানউল্লাহ আমান, আমিনুল হক, এসএ ছিদ্দিক সাজুসহ মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের মোট ৫৭টি স্পটে দুস্থদের মধ্যে খাবার সামগ্রী ও বস্ত্র বিতরণ করেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। এছাড়া এদিন নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) উদ্যোগে দিনব্যাপী বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ বিতরণের জন্য ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

হাইকোর্ট মাজারে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ : শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে হাইকোর্ট মাজারে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। মঙ্গলবার দুপুর ১টায় হাইকোর্ট মাজার মসজিদের সামনে দুস্থদের মাঝে প্রায় ১ হাজার প্যাকেট খাবার বিতরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এ জে মোহাম্মদ আলী,

সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিমকোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক বদরুদ্দোজা বাদল, মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিমকোর্ট ইউনিটের সভাপতি আবদুল জব্বার ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল, আইনজীবী মোহাম্মদ আলী, আবেদ রাজা, মনির হোসেন, রাগীব রউফ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির মঞ্জু, মোরশেদ আল মামুন লিটন, মনিরুজ্জামান আসাদ প্রমুখ।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ