(আজকের দিনকাল):আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি ও শুল্ক সুবিধার অজুহাতে আবারো বেড়েছে চিনির দাম। কুরবানির ঈদের আগেই কেজিতে বাড়ানো হলো ২৫ টাকা। এমনিতেই সরকার নির্ধারিত চিনির দাম মানছিলেন না ব্যবসায়ীরা। ১২০ টাকা কেজির চিনি বাজারে বিক্রি হচ্ছিল ১৩৫ টাকায়। এর মধ্যেই এ নতুন মূল্য প্রস্তাব করেন তারা।
২২ জুন থেকে চিনির দাম কেজিতে সার্বোচ্চ ২৫ টাকা করে বাড়ানোর কথা জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছেন মিল মালিকরা। সোমবার সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বাণিজ্য সচিবকে এ চিঠি পাঠান তারা।
সরকার নির্ধারিত চিনির দাম বর্তমানে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১২০ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ১২৫ টাকা। নতুন প্রস্তাবে আগামী ২২ জুন থেকে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১৪০ টাকা এবং প্যাকেট চিনি ১৫০ টাকা নির্ধারণের কথা জানানো হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, ভোজ্যতেল, চিনিসহ কয়েকটি আমদানি পণ্যের দাম বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে নির্ধারণ করে সরকার। দামের অস্থিরতার মধ্যে ব্যবসায়ীরা সম্প্রতি সরকারের দ্বারস্থ হয়ে দাম বৃদ্ধির চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এখন নিজেদের সিদ্ধান্তেই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
বাণিজ্য সচিবের বরাবর পাঠানো চিঠির ভাষ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের বাজারে সরকার নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি করতে গিয়ে ‘লোকসানের মুখে পড়ছে’ কোম্পানিগুলো।
গত ৬ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছিলেন মিল মালিকরা। সে অনুযায়ী ২২ জুন থেকে চিনির দাম নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশে সিটি গ্রুপ, দেশবন্ধু গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, আব্দুল মোনেম গ্রুপ ও টিকে গ্রুপ তেল ও চিনি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।
সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির কাঁচামালের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রকম শুল্ক সুবিধা তুলে নেওয়া হয়েছে। এখন বাজার থেকে এক কেজি চিনি কিনে খেতে গেলে ভোক্তাকে ৪২ টাকা শুল্ক দিতে হচ্ছে। আমরা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রতি টন চিনির কাঁচামাল ৬৪০ ডলারে সংগ্রহ করেছি, আজকের রেট ৬৭০ ডলার। সরকার প্রতি টন ৫৮০ ডলার বিবেচনায় সর্বশেষ চিনির দাম ঠিক করেছিল।
চিঠির বিষয়ে কথা বলতে সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব গোলাম রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষও ফোন ধরেননি।
তবে সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে দেশের বাজারে চিনির উচ্চমূল্যের জন্য আন্তর্জাতিক বাজারে দামের অস্থিরতা ও মূল্য বৃদ্ধিকেই দায়ী করেন সচিব।
তিনি সেদিন বলেন, চিনির প্রধান উৎস ব্রাজিল ও ভারত। তবে এ মুহূর্তে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ। আন্তর্জাতিকভাবে চিনির একটা সংকট যাচ্ছে। চিনির দাম প্রতি টন ৪৫০ ডলার থেকে বেড়ে গিয়ে প্রায় ৭০০ ডলারে ঠেকেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম যখন বেশি অস্থিতিশীল থাকে তখন দেশের বাজারে দাম স্থিতিশীল করা কঠিন।
Leave a Reply