আজ ২৩শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না: ফখরুল

(আজকের দিনকাল):বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। তার আগে সরকারকে পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের দেশে ফেরার সুযোগ সৃষ্টি, সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে দায়ের করা লাখ লাখ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। দাবি না মানলে রাজপথেই ফায়সালা করা হবে।

তিনি বলেন, আমাদের এ লড়াই শুধু বিএনপির নয়; এটা সারা দেশবাসীর। এ লড়াইয়ের মাধ্যমে জনগণকে ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, সংসদ বিলুপ্ত ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজন করা। এখন আমাদের এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পদত্যাগ। আর মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আসার সুযোগ সৃষ্টি করা।

সোমবার বিকালে বগুড়া শহরের সেন্ট্রাল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে তরুণ প্রজন্মকেও জাগ্রত করতে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলার তারুণদের নিয়ে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সবক্ষেত্রে এ সরকার ব্যর্থ দাবি করে ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) নিজেরা কি করে তাও জানে না। শুধু আমাদের ওপর ঋণের বোঝা বাড়িয়ে দিতে পারে। ১২ বছরে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারেনি। ভারত সব গেট খুলে দিয়েছে। আবারো দেশে বন্যা হবে।

মির্জা ফখরুল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, দেশের অবস্থা ভয়াবহ। দেশ খাদের কিনারে রয়েছে; ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৯০ সালের গণআন্দোলনে তরুণ-যুবকরা সফল করেছে। তাই আগামী দিনে গণতন্ত্র পুন:প্রতিষ্ঠা ও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আন্দোলনে তরুণদের সামনে থাকতে হবে।

বিশেষ অতিথি বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, আমরা ওয়াদা করছি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে ঘরে ফিরে যাবো না। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচন হবে না। এর আগে খালেদা জিয়া মুক্তি ও তারেক রহমানকে দেশে ফেরার সুযোগ দিতে হবে।

কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি এসএম জিলানীর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। বিশেষ বক্তা ছিলেন, ছাত্রদল সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ।

অন্যান্যের মধ্যে বিশেষ অতিথি বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশ সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।

এদিকে তারুণ্যের সমাবেশ সফল করতে উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলা থেকে শত শত নেতাকর্মী দলীয় ও জাতীয় পতাকা হাতে স্লোগানসহকারে বগুড়া শহরের সেন্ট্রাল স্কুল মাঠে উপস্থিত হন। মাঠে স্থান সংকুলান না হওয়ায় তাদের পাশে পৌর পার্ক ও বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেন।

সভামঞ্চে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের জন্য দুটি চেয়ার ফাঁকা রাখা হয়। চেয়ারে দুজনের ছবি রাখা হয়েছিল।

এছাড়া বিএনপির সমাবেশ চলাকালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শহরের জিরোপয়েন্ট সাতমাথায় অবস্থায় নেয়। সেখানে বিপুলসংখ্যাক পুলিশ মোতায়েন ছিল। এছাড়াও শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ব্যাপক তৎপর ছিলেন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ