(আজকের দিনকাল):নিজের পুত্রকে বাঁচাতে গিয়ে জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রাণ গেল বাবা শাহেব আলীর (৫৩)। ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের খলতবাড়ি এলাকায় এ ঘটনায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মৃত্যুর বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ জনতা ঘটনার মূলহোতা মৃত সামির উদ্দিনের পুত্র মো. বাবুল মিয়ার বাড়িঘর, মৃত সিরাজুল ইসলাম সিরাজের পুত্র হাবিবুর রহমান, মৃত আবুল হাসিমের পুত্র পারভেজ মিয়া ও হুমায়ুন কবিরের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে ভাঙচুর করে।
সংঘর্ষে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মাওহা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো. মানিক মিয়া। তিনি জানান, এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় আহতরা হলেন- নিহতের ভাই সাহেদ আলী (৫০), কাঞ্চন মিয়া (৪০), সাহেদ আলীর পুত্র এবাদুল হক (২৩), জামরুল ইসলাম (২০), নিহতের পুত্র মো. রাজিব মিয়া (২৫)। এছাড়াও অপরপক্ষের চারজন আহতের খবর পাওয়া গেছে। তবে তাদের নাম জানা যায়নি। আহতরা গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহতের পুত্র রাজিব জানান, আমার চাচা সাহেদ আলীর সঙ্গে জমি নিয়ে বাবুলদের ঝগড়া চলছিল। আমি সেখানে গিয়েছিলাম। আমার বাবা আমাকে ফিরিয়ে আনতে গিয়েছিল। তারপর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসি দাবি জানাচ্ছি।
নিহতের বড় ভাই রাজ আলী জানান, বাবুল মিয়ার সঙ্গে তার ছোট ভাই সাহেদ আলীর জমিসংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। কিছুদিন আগে বাবুল মিয়ার নেতৃত্বে সাহেদ আলীর স্ত্রী রেহেনা খাতুনের হাত-পা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় এলাকায় গত রমজান মাসে সালিশ হয়। সালিশে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এতে ওরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। শনিবার দুপুরে বাবুল মিয়ার নেতৃত্বে সাহেদ আলীর জমির পাশে মাটি ফেলে। এতে সাহেদ নিষেধ করলে ওরা ১৫-২০ জন হামলা চালায়। আমার ভাই সাহেব আলী ফিরাতে গেলে তাকে কুপিয়ে গুরুত্বর জখম করে। ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে সে মারা যায়।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের পরপরেই আসামিরা পালিয়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়িঘর ও আশপাশে খুঁজেও কোনো আত্মীয়-স্বজনকে পাওয়া যায়নি। একাধিকভাবে চেষ্টা করেও আসামিদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাহমুদুল হাসান জানান, ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
Leave a Reply