আজ ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মৃত্যুর ২১ বছর পর দুর্নীতির মামলায় খালাস চেয়ারম্যান

(আজকের দিনকাল):মৃত্যুর ২১ বছর পর দুর্নীতির মামলায় খালাস পেয়েছেন রাজশাহীর বাজুবাঘার তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুস সোবহান। ৪০ বছর পর ৪০ হাজার টাকা আত্মসাতের মামলায় তিনি খালাস পান। ২০২২ সালের ২৭ জানুয়ারি সেই আপিল নিষ্পত্তি করে রায় দেন হাইকোর্ট। সম্প্রতি ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।

রায়ে বলা হয়, এ মামলার আপিল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ২৪ জানুয়ারি দুদকের আইনজীবী একটি হলফনামা দেন। সেখানে বলা হয়, বাজুবাঘা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আপিলকারী আব্দুস সোবহান ২০০১ সালের ১৩ জুন মারা যান। সুতরাং ফৌজদারি কার্যবিধি ৪৩১ ধারা অনুসারে অন মেরিটে দণ্ড ও সাজার বিষয়ে আপিল নিষ্পত্তির সুযোগ নেই। তবে প্রসিকিউশন সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষককে এক্সামিন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়া অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রসিকিউশন সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পারেনি। তাই, আপিলকারী এসব অভিযোগ থেকে খালাস পেতে পারেন। তার বিরুদ্ধে দেওয়া রায় এবং দণ্ডাদেশ ও জরিমানার আদেশ বাতিল করা হলো। ফলে আপিল মঞ্জুর করা হলো।

প্রসঙ্গত, ১৯৮২ সালে রাজশাহীর চারঘাট থানার বাজুবাঘা ইউনিয়নের একটি স্কুলের জন্য দেওয়া কয়েকটি হাটের ইজারার টাকা, বিভিন্ন প্রজেক্টের অর্থসহ ট্যাক্সের ৪০ হাজারের অধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে চেয়ারম্যান আব্দুস সোবহান সরকারের বিরুদ্ধে। সহকারী কমিশনার মো. ইছাহাক আলীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ নিয়ে মামলা করা হয়। বিচার শেষে ১৯৮৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রায় দেন রাজশাহী বিভাগীয় স্পেশাল জজ। রায়ে চেয়াম্যানকে ৫ বছরের দণ্ড এবং ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ড দেন। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ডপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাইকোর্টে আপিল করেন।

কিন্তু দীর্ঘদিন এ আপিল আর শুনানি হয়নি। প্রধান বিচারপতি এসব পুরাতন আপিল মামলার শুনানির উদ্যোগ নিলে এ মামলাও কার্যতালিভুক্ত হয়। এরপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২২ সালের ২৭ জানুয়ারি রায় দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম রাবেয়া মিতি, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আনজুমান আরা বেগম ও কাজী শামসুন নাহার কণা। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ। তবে আপিলের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

দুদুকের আইনজীবী শাহীন আহমেদ বলেন, এ মামলার আপিলের পর আর কেউ খোঁজ রাখেনি। না রাষ্ট্রপক্ষ, না দুর্নীতি দমন ব্যুরো। আসামিপক্ষও না। এর মধ্যে ২০০৪ সালের আইনে দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করা হয়। তখন হয়তো পুরোনো মামলার আর খোঁজ রাখতে পারেনি দুদক। ২০১৯ সালে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন পুরোনো মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেন। এরপর এ ধরনের মামলাগুলো শুনানির জন্য কার্যতালিকাভুক্ত হয়। এর মধ্যে দুদক জানতে পারে, ওই চেয়ারম্যান ২০০১ সালে মারা গেছেন। বিষয়টি হাইকোর্টকে অবহিত করার পর আপিলটি নিষ্পত্তি করে দেন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ