আজ ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ


রাজধানীতে হত্যা মামলায় ৫ ছিনতাইকারী গ্রেফতার

(আজকের দিনকাল):গাজীপুরে ফল ব্যবসায়ী হত্যার ঘটনায় মূলহোতা আরজু মিয়াসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। শনিবার রাতে রাজধানীর দক্ষিণখান ও গাজীপুরের পূবাইল থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তারা সবাই ছিনতাইকারী। ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়াতে ফল ব্যবসায়ী মোমেন শেখকে খুন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

আজ সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেনঢান্ট কর্নেল মো. মোসতাক আহমেদ।

র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, গত ১৪ জুলাই ভোরবেলায় ভিকটিম ফল ব্যবসায়ী মোমেন শেখ প্রতিদিনের মতো ফল কিনতে মাহবুব আলমের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাযোগে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকার উদ্দেশে রওয়ানা করেন। হাড়িনাল হানকাটা ব্রিজে পৌঁছলে অজ্ঞাতানামা পিক-আপযোগে ৫/৬ জন ছিনতাইকারী অটোরিকশার গতিরোধ করে এবং ভিকটিম মোমেন শেখের কাছে থাকা ফল কেনার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ভিকটিম মোমেন শেখ বাধা দিলে ছিনতাইকারীদের সাথে তার ধস্তাধস্তি হয়।
এক পর্যায়ে ছিনতাইকারীরা মোমেন শেখের (৫০) বুকে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে ছিনতাইকারীরা ভিকটিমের মোবাইল ফোন নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
ওই ঘটনায় ভিকটিমের স্ত্রী মোছা. সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে জিএমপির গাজীপুর সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন দুষ্কৃতিকারীর বিরুদ্ধে একটি ছিনতাইসহ হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এই ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত ঘটনা রহস্য উন্মোচনের জন্য র‌্যাব-১ এর আভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামি গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এরই ধারাবাহিকতায় গতরাতে রাজধানীর দক্ষিণখান ও গাজীপুরের পূবাইল থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এ সময় হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি আরজু মিয়া (৩৪), মো. সোহান (১৮), নবী হোসেন (২৯), মো. রাজিব মিয়া (২১) ও মো. শাকিল আহম্মেদকে (১৮) গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত একটি পিকআপ, দুটি লোহার রড, একটি লোহার কঞ্চি, একটি লাঠি ও আসামিদের ছয়টি মোবাইল এবং ভিকটিমের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ভিকটিম মোমেন শেখকে হত্যার কথা স্বীকার করেন এবং এই চাঞ্চল্যকর হত্যার লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দেন।

র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার ছিনতাইকারী দলের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন এলকায় ছিনতাই করে থাকেন। এ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা আরজু মিয়ার ভাষ্যমতে তারা ছিনতাইয়ের উদ্দেশে গত ১৪ জুলাই ভোরবেলায় বাসা থেকে বের হয়ে নরুন বাজার এলাকায় অবস্থান করেন এবং ভিকটিম মোমেন শেখের অটোরিকশাটিকে দেখে তা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। অটোরিকশাটি হানকাটা ব্রিজের উপর পৌঁছালে তারা এর গতিরোধ করেন এবং চালক মাহাবুব আলমকে অটোরিকশা থেকে টেনে-হেঁচড়ে রাস্তার পাশে দাঁড় করে বুকে চাকু ধরে ভয় দেখাতে থাকেন। এতে ভিকটিম মোমেন শেখ তাদের ছিনতাইয়ে বাধা দিলে আরজু মিয়া তার হাতে থাকা সূচালো লোহার রড দিয়ে ভিকটিমের হাতে, পেটে ও বুকে আঘাত করেন এবং এক পর্যায়ে সূচালো লোহার রড বুকে ঢুকিয়ে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করেন। তার দেখাদেখি অপর সহযোগী আসামি সোহান তার সঙ্গে থাকা অপর আরেকটি সূচালো লোহার রড দিয়ে আঘাত করেন। পরে মৃত্যু নিশ্চিত হলে ভিকটিমের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে অটোচালক মাহাবুব আলম ভিকটিমকে গুরুতর জখম অবস্থায় অটোরিকশায় করে দ্রুত শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজীপুর নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন।

Share

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ