আজ ২১শে কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জনতার হাতে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে আ. লীগ নেতার স্ত্রী ধরা, অতঃপর…

(আজকের দিনকাল):ঢাকার ধামরাইয়ে পরকীয়া প্রেমিকের সঙ্গে জনতার হাতে আটক হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রী। এ ঘটনায় ওই পরকীয়া প্রেমিককে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন জনতা।

বৃহস্পতিবার দিনগত গভীর রাতে এ ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নের বালিথা বাজার হাবিবা বেকারি এলাকায়।

জনতার হাতে আটক প্রেমিকের নাম মো. আব্দুল আলেক মিয়া ও উপজেলার সতীপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হালিমের দ্বিতীয় স্ত্রী।

ওই আওয়ামী লীগ নেতার দ্বিতীয় স্ত্রী বালিখা বাজার হাবিবা বেকারির নিকটে মোহাম্মদ ভূঁইয়া নামক এক ব্যক্তির বাড়িতে ভাড়া করা বাসায় বসবাস করতেন।

এই পরকীয়া প্রেমিক যুগল আটকের ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। প্রেমিক যুগল আটকের ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শত শত মানুষ ওই রাতেই ওই বাড়িতে এসে ভিড় জমান।

এলাকাবাসী জানান, পতিপারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হালিম তার প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই ওই তরুণীকে বিয়ে করেন। স্থানীয় মসজিদের একজন ইমাম দিয়ে বিবাহ পড়ানো হলেও তিনি কোনো কাবিন রেজিস্ট্রি করেননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছ। তিনি সরকারি দলের একজন নেতা হলেও কাবিন রেজিস্ট্রি না করে কেউ আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন করেছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

এলাকাবাসী আরও জানান, পরিবারের চাপে তিনি নিরুপায় হয়ে তার দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে ভূঁইয়া নামে ওই ব্যক্তির বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। তবে তিনি পারিবারিক চাপে বেশিরভাগ সময়ে নিজ বাড়িতে থাকতেন। এ সুযোগে ওই আওয়ামী লীগ নেতার দ্বিতীয় স্ত্রী শিল্পী আক্তার রাজমিস্ত্রি মো. আব্দুল খালেকের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন।

তিনি প্রতিনিয়ত ওই রাজমিস্ত্রির সঙ্গে একই বিছানায় রাত যাপন করতেন। এমনকি সুযোগ পেলেই এ প্রেমিক যুগল দিনে ও রাতে সবসময়ই গোপন অভিসারে মিলিত হতেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। বিষয়টি এলাকাবাসীর দৃষ্টিগোচর হলে প্রেমিক যুগলকে আটক করার জন্য এলাকাবাসী গোপন পাহারার ব্যবস্থা এবং বিষয়টি ওই আওয়ামী লীগ নেতাকে অবহিত করেন।

গতকাল দিনগত রাত ২টার দিকে ওই প্রেমিক কি যোদলকে একই কক্ষের ভেতর একই বিছানায় আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন। এর পর তাদের ও উপর্যুপরি গণধোলাইও দেওয়া হয়। পরিশেষে এলাকাবাসী বিষয়টি ধামরাই থানার ওসি পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদকে অবহিত করেন।

এর পর ধামরাই থানার পুলিশ ওসি পুলিশ পরিদর্শক মো. হারুন অর রশিদ উপপুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ বদরুল আলম ও মোহাম্মদ  সজিব তালুকদারকে সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পাঠান। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার হাতে আটক ওই পরকীয়া প্রেমিক আব্দুল আলেককে থানায় নিয়ে আসেন এবং আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রীকে পরিবারের জিম্মায় দিয়ে আসেন।। এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন ।

এ ব্যাপারে পরকীয়া প্রেমিক রাজমিস্ত্রি আব্দুল আলেক জানান, এ ক্ষেত্রে আমার কোনো দোষ নেই। শিল্পী আক্তারের স্বামী আওয়ামী লীগ নেতা মো. আব্দুল হালিম তাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় দিতে না পারায় সে আমাকে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়াতে বাধ্য করে।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রী শিল্পী আক্তার জানান, আমার স্বামী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হালিম, তাকে বিয়ে করলেও কোনো কাবিন রেজিস্ট্রি করেননি। ব্যস্ত থাকার অজুহাতে আমাকে একদমই সময় দিতে চাননি। কাজেই একাকী থাকার যন্ত্রণা সইতে না পেরে আমি ওই রাজমিস্ত্রির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ি।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হালিম জানান, এ বিষয়ে আমার খুবই লজ্জা হচ্ছে। কাজেই এ নিয়ে আমার কোনো কিছু বলার নেই। শুধু একটি কথাই বলতে চাই— দুনিয়াতে অনেক মানুষ আছে, যাদের সুখে থাকতে মোটেও ভালো লাগে না। এ ক্ষেত্রেও তার কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।

ধামরাই থানার ওসি পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, এলাকাবাসী ওই প্রেমিক যুগলকে আটক করে আমাকে খবর দেন। এর পর আমি উপপুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ বদরুল আলম ও মোহাম্মদ সজীব তালুকদারকে ঘটনাস্থলে পাঠাই। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই পরকীয়া প্রেমিক রাজমিস্ত্রি আব্দুল আলেক মিয়াকে থানায় নিয়ে আসে এবং আওয়ামী লীগের নেতার স্ত্রীকে পরিবারের জিম্মায় রেখে আসেন।

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ