আজ ২৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

কারাগারের নিরাপত্তা: সময়োপযোগী কৌশল নির্ধারণ কাম্য

(আজকের দিনকাল):কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া সহিংস পরিস্থিতির পর কারাগারগুলোতে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। দেশের সব কারাগারের নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে কারা অধিদপ্তরে গঠন করা হয়েছে জরুরি সিকিউরিটি সেল। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে শনিবার খবরে প্রকাশ-নবগঠিত সেল এরই মধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। সেল থেকে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করা হচ্ছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসহ দেশের ৬৮টি কারাগারে।

নিরাপত্তার জন্য পুলিশের পাশাপাশি কোনো কোনো কারাগারে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। যেসব কারাগারে সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়নি, সেগুলোর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন এ দুই বাহিনীর সঙ্গে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে সঙ্গে সঙ্গেই যেন এ দুই বাহিনীর সহায়তা নেওয়া যায়, সেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন তারা। এছাড়া সব কারাগারের ভেতরে ও বাইরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তাসংশ্লিষ্টরা সশস্ত্র অবস্থায় দায়িত্ব পালন করছেন।

দেরিতে হলেও কারা কর্তৃপক্ষের এমন উদ্যোগ সাধুবাদযোগ্য। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, রোগী মরিবার পরে ডাক্তার আসিয়া পৌঁছাইলে কি তাহার উপযোগিতা থাকে? গেল ক’দিনের সহিংস পরিস্থিতিতে সরকারি স্থাপনাগুলোর পাশাপাশি দেশের সব কারাগারের নিরাপত্তাও বাড়ানো উচিত ছিল। এর ব্যত্যয় ঘটেছিল বলেই নরসিংদী জেলা কারাগারে হামলা, ভাংচুর, অস্ত্র লুট, আটক জঙ্গি সদস্যদের ছিনিয়ে নেওয়া এবং আসামি পালিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা আমাদের দেখতে হয়েছে, যা কাঙ্ক্ষিত ছিল না কোনোভাবেই। অবশ্য পরবর্তী সময়ে পুলিশের বিশেষ অভিযানে জঙ্গি সদস্যদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এরই মধ্যে দুই নারীসহ চার জঙ্গিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। এছাড়া কারাগার থেকে লুট হওয়া ৪৫টি অস্ত্র, হ্যান্ডকাফ ও প্রায় ১১০০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর এ পর্যন্ত ৪৮১ জন কয়েদি আত্মসমর্পণও করেছে।

আমরা মনে করি, কারাগারের মতো স্পর্শকাতর স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতার কৌশল নির্ধারণও জরুরি। কারাগারের ভেতরে-বাইরে – কোনো ধরনের অপতৎপরতার নীলনকশা প্রস্তুত হচ্ছে কিনা, তা জানতে গোয়েন্দা তথ্যই অধিক কার্যকর। এর ফলে তা মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতির সময়ও মেলে। দেশের সব কারাগারের নিরাপত্তা বজায় রাখতে কর্তৃপক্ষ সদা সচেষ্ট থাকবে, এটাই প্রত্যাশা।-ডেস্ক

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ