(আজকের দিনকাল):বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবদুল মোতালেব সাজ্জাদ মাহমুদ জানিয়েছেন, বিশৃঙ্খল আন্দোলনকারীরা অঙ্গীভূত আনসার, তাদের সঙ্গে ব্যাটালিয়ন আনসারের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ব্যাপারে তিনি সবাইকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন। রোববার (২৫ আগস্ট) রাতে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান তিনি।
এর আগে রাতে সচিবালয় এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় আনসার সদস্যদের। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হন। তাদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহও রয়েছেন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার সকাল থেকে সচিবালয়ের সামনে শত শত আনসার সদস্য অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে দুপুর ১২টা থেকে তারা সচিবালয়কে অবরুদ্ধ করে রাখে। এতে সবগুলো গেট বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল ৫টায় অফিস ছুটি হলেও রাত সাড়ে ১০টার আগে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হতে পারেননি।
সচিবালয়ে আনসারের একদল সদস্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহসহ অনেককে আটকে রেখেছেন- এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলসহ টিএসসিতে থাকা অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন। আনসার সদস্যদের প্রতিহত করতে তারা মিছিল নিয়ে সচিবালয় এলাকায় যান। এ সময় দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে সাংবাদিকসহ অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। পরে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া খেয়ে আনসার সদস্যরা সচিবালয় ছেড়ে পালিয়ে যান। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে উভয় পক্ষকে শান্ত করার চেষ্টা করে।
আনসারের উচ্চপর্যায়ে বড় রদবদল
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে দাবি আদায়ে পেশাজীবীদের বিভিন্ন পক্ষের আন্দোলনের মধ্যে গত বুধবার (২১ আগস্ট) মাঠে নামেন আনসার সদস্যরা। তারা দৈনিক ভাতার ভিত্তিতে কাজ করতে রাজি নন। রাজধানীর শাহবাগ ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে গত দুদিন ধরে আন্দোলনে ছিলেন আনসার সদস্যরা। রোববার বিকেলে বন্যার্ত মানুষের জন্য ত্রাণবহনকারী কয়েকটি ট্রাকও আটকে দেয় তারা। একপর্যায়ে তাদের একাংশ বাংলাদেশ সচিবালয়ে ঢুকে সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনের আশপাশের এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও জমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সদর দপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এতদ্বারা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সাম্প্রতিক উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে সোমবার (২৬ আগস্ট) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন (যমুনা) এর আশেপাশের এলাকায় যে কোনো প্রকার সভা, সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ প্রদর্শন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হলো।
Leave a Reply