(আজকের দিনকাল):সাবেক সেনা কর্মকর্তা, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শরিফুল হক ডালিম দীর্ঘদিন আড়ালে থাকার পর সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের লাইভ টকশোতে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে কথা বলেছেন। শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত এই সেনা কর্মকর্তা তার জীবনের নানা অজানা গল্প এবং বিতর্কিত ইতিহাস নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।
লাইভে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে মেজর ডালিম জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি একাধিকবার আহত হন। যুদ্ধের সময় বাম হাতের একটি আঙুল হারানোর ঘটনাটি তার জীবনের একটি চিরস্থায়ী স্মৃতি। টকশো চলাকালীন তিনি হাত উঁচিয়ে আঙুল হারানোর প্রমাণ দেখান এবং বলেন, “যুদ্ধকালীন সময়ের ভয়াবহতা ও ত্যাগের নিদর্শন আমার শরীরে বহন করি। তিন-চারবার আহত হয়েছি, আর এই হাত তার একটি সাক্ষী।”
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের সেনা অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এর শিকড় মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই প্রোথিত ছিল।” তিনি অভিযোগ করেন, শেখ মুজিবুর রহমানের স্বৈরাচারী আচরণ এবং বাকশালের কার্যক্রমের কারণে দেশের মানুষ তার জুলুম থেকে মুক্তি চেয়েছিল।
তিনি আরও দাবি করেন, “১৫ আগস্ট মুজিব নিহত হন সেনা অভ্যুত্থানে। এটি বিপ্লবীদের একটি সংগঠিত অভিযান ছিল। দুপক্ষেই হতাহতের ঘটনা ঘটে। তবে বিপ্লবীরা বিজয়ী হয়ে ক্ষমতা নিজের হাতে নেয়।”
মেজর ডালিম তার বক্তব্যে ভারতের প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের সঙ্গে চুক্তি করে আমরা তাদের করদরাজ্যে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে ছিলাম। বর্তমানে ভারতের সম্প্রসারণবাদী নীতির বিরোধিতা করে আমাদের নতুন করে একটি স্বাধীনতার জন্য লড়তে হবে।”
বর্তমান প্রজন্মের বিপ্লবীদের উদ্দেশ্যে বার্তা
২৪-এর ছাত্র আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “বর্তমান প্রজন্মের বিপ্লবীরা সঠিক পথে রয়েছে। তাদের প্রতি আমার বিপ্লবী শুভেচ্ছা এবং সহযোগিতা থাকবে। আমরা তাদের বিজয়ের জন্য দোয়া করছি।”
ইলিয়াস হোসেন এই সাক্ষাৎকার নিয়ে বলেন, “রবিবারের লাইভ ইতিহাসের সাক্ষী ছিল। মেজর ডালিমের মতো একজন ব্যক্তিত্বের বক্তব্য শোনা আমার জীবনের স্মরণীয় মুহূর্ত।” লাইভে মেজর ডালিম তার জীবনের নানা অধ্যায়, মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় সময় এবং পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।-ডেস্ক
Leave a Reply