আজ ৫ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধন দ্রুত পাসের দাবি

(আজকের দিনকাল):তরুণ প্রজন্মের সুস্থ ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি জানিয়েছে তামাক বিরোধী শিক্ষক ফোরাম।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে নারী মৈত্রী আয়োজিত ‘তামাক বিরোধী শিক্ষক ফোরাম’ গঠন বিষয়ক সভায় এ দাবি জানান তারা। নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে বিভিন্ন বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমন্বয়ে গঠিত তামাক বিরোধী শিক্ষক ফোরাম এর আহ্বায়ক ছিলেন ড. খালেদা ইসলাম, পরিচালক, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সহ-আহ্বায়ক ছিলেন বাংলাদেশ শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক তনুশ্রী হালদার, ও আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক শামীমা নাসরীন।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির প্রেসিডেন্ট সীমা জহুর, তামাক বিরোধী মায়েদের ফোরামের আহ্বায়ক শিবানী ভট্টাচার্য এবং সহ-আহবায়ক শাহনাজ পলি।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নারী মৈত্রীর প্রকল্প সমন্বয়ক নাসরিন আক্তার। তিনি বলেন, প্রতিদিন তামাক সেবনের কারণে বাংলাদেশে ৪৪২ জন মানুষ প্রাণ হারান। এই মর্মান্তিক পরিসংখ্যান আমাদের জনস্বাস্থ্য ও জীবন রক্ষার ক্ষেত্রে এক গভীর সংকট সৃষ্টি করেছে। যদিও বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম, তবুও ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরণ এবং তামাকজাত পণ্যের বিজ্ঞাপন ও প্রণোদনা নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে সর্বোত্তম মান অর্জনে আমরা এখনো পিছিয়ে আছি। তামাক সেবনের ফলে ক্যান্সার, হৃদরোগ, ফুসফুসের রোগসহ অসংখ্য অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। তাই, এসব রোগ মোকাবিলায় তামাক নিয়ন্ত্রণের কোনো বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ৬ সংশোধনী দ্রুত পাশ এবং কার্যকর করা অতি জরুরি। এর মধ্যে পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক পণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটের আমদানি, উৎপাদন, ব্যবহার ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা এবং সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ বাড়ানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ফোরামের আহ্বায়ক ড. খালেদা খানম বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল ইয়ুথ টোব্যাকো জরিপ অনুযায়ী, ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ধূমপানের হার বাংলাদেশ, ভারত এবং ইন্দোনেশিয়াতে সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে প্রায় ১২ শতাংশ কিশোর-কিশোরী নিয়মিত ধূমপানে আসক্ত, যা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি গুরুতর সংকেত।

সীমা জহুর, বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো নানা কৌশলে যুব সমাজকে তাদের ক্ষতিকর পণ্যে আকৃষ্ট করছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোকে তারা একটি বড় কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে। তামাক কোম্পানির বিজ্ঞাপন, প্যাকেজিং, সোশ্যাল মিডিয়া এবং ক্যাম্পাসের আশপাশের টং দোকানে সহজলভ্যতা শিক্ষার্থীদের জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। শিক্ষক ফোরামের অন্যান্য সদস্যরাও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাস করা হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পাবে বেড়ে ওঠার জন্য একটি সুস্থ, নিরাপদ এবং তামাকমুক্ত পরিবেশ। যেখানে তারা হবে স্বাস্থ্যবান, সুস্থ মানসিকতার অধিকারী এবং জাতির প্রতি দায়িত্বশীল নাগরিক। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাসের জোর দাবি জানান তারা।-ডেস্ক

Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ